জনগণ, সম্প্রদায় ও সমাজের জন্য বাংলাদেশকে তার আর্থিক সম্ভাবনা অর্জনে সহায়তা করতে গতকাল শুরু হয়েছে বাংলাদেশ ফিনটেক সামিট-২০২০। এবারের সামিটে সংলাপের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ ফিনটেক কোম্পানিগুলোর জন্য সঠিক কাঠামো গঠন ও নীতিনির্ধারণের বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে, যাতে বাংলাদেশের ফিনটেক ইন্ডাস্ট্রি আরো স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়।
লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের পরিবেশনায়, গার্ডিয়ান লাইফ ইন্স্যুরেন্সের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং নগদের সহযোগিতায় গতকাল বিকালে শুরু হয় দুই দিনব্যাপী বাংলাদেশ ফিনটেক সামিট-২০২০। এদিন সন্ধ্যায় প্রথম দিনের কার্যক্রম শেষ হয়। আজ বেলা সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরাম আয়োজিত এ সম্মেলনে সারা দেশ ও দেশের বাইরে থেকে থেকে ফাইন্যান্স পেশাদাররা অংশগ্রহণ করেন।
‘শেপিং ফিউচার অব ফাইন্যান্স ফর পিপল’ শীর্ষক প্রসঙ্গ সামনে রেখে আয়োজিত সম্মেলনটির উদ্দেশ্য হলো ফিনটেক কোম্পানিগুলোর জন্য এমন একটি মঞ্চ তৈরি করা, যেখানে তারা তাদের সাফল্য, ব্যর্থতা ও উঠে দাঁড়ানোর গল্পগুলো ভবিষ্যতে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে শেয়ার করে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে পারে। সামিটের দ্বিতীয় সংস্করণে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ফিনটেক বিশেষজ্ঞরা পাঁচটি কিনোট সেশন, চারটি ইনসাইট সেশন, তিনটি প্যানেল আলোচনা এবং দুটি কেস স্টাডি উপস্থাপন করবেন।
গতকাল সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ব্র্যান্ড ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক শরিফুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আর্থিক খাত অর্থনীতির প্রধান অংশ এবং বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নে বেশ ভালো করছে। বাংলাদেশ ধীরে ধীরে বিকাশ হচ্ছে এবং আমরা একটি অসাধারণ প্রবৃদ্ধি লক্ষ করছি।
স্বাগত বক্তব্যে শরিফুল ইসলাম মহামারী-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং কীভাবে ফিনটেক এতে সহায়তা করতে পারে সেই বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে ফিনটেক বাংলাদেশের গতি বাড়িয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন সামনে এসেছে এবং সাফল্যের সঙ্গে সমস্যার সমাধান করছে।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী বছরগুলোয় এ গতি আরো ত্বরান্বিত হবে। এখনো ছোট ছোট সমাধান আসছে, আমাদের সঠিক সময়ে তাদের শনাক্ত করে একসঙ্গে সামনে এগিয়ে যেতে হবে।
সম্মেলনের কিনোট বক্তাদের মধ্যে রয়েছেন মাস্টারকার্ডের এশিয়া-প্যাসিফিকের প্রডাক্ট ম্যানেজমেন্ট, ইনোভেশন ও কাস্টমার সলিউশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট টোবিয়াস পুহেসে, ইমপ্যাক্ট ইনভেস্টর, বিজনেস বিল্ডার, চেয়ারম্যান, অ্যাকিনি ক্যাপিটাল (নরওয়ে), টুএক্স এডুকেশনের প্রতিষ্ঠাতা এবং কোডারসট্রাস্ট গ্লোবালের চেয়ারম্যান কার্স্টেন জেলডে, ডিলয়েট ইন্ডিয়ার পার্টনার বিজয় মাণি, ডিজিটাল ও ডাটা টিম, মার্কেটস এবং সিকিউরিটিজ সার্ভিসেস বিজনেসের (এইচএসবিসি সিঙ্গাপুর) পরিচালক রাজীব তুম্মালা, আইএফসির এশিয়া এবং প্যাসিফিকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশনস গ্রুপের সিনিয়র অপারেশন্স অফিসার অনন্যা ওয়াহিদ কাদের।
সম্মেলনে শীর্ষস্থানীয় প্যানেল সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন, পিডব্লিউসি বাংলাদেশের ম্যানেজিং পার্টনার মামুন রশিদ, ব্যাংক এশিয়ার এমডি মো. আরফান আলী, ব্র্যাক ব্যাংকের এমডি ও সিইও সেলিম আরএফ হোসেন, প্রাইম ব্যাংকের এমডি ও সিইও রাহেল আহমেদ, সিটি ব্যাংকের এমডি ও সিইও মাশরুর আরেফিন, এশিয়ান টাইগার ক্যাপিটাল পার্টনারসের গ্রুপ চেয়ারম্যান ইফতি ইসলাম, এসবিকে টেক ভেঞ্চারসের প্রতিষ্ঠাতা সোনিয়া বশির কবির, মাস্টারকার্ডের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, নগদের এমডি তানভীর এ মিশুক।
সামিটে অন্যান্য প্যানেল সদস্যদের মধ্যে আরো রয়েছেন স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সিইও নাসের এজাজ বিজয়, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এমডি ও সিইও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান, গার্ডিয়ান লাইফের এমডি ও সিইও এমএম মনিরুল আলম, ডটলাইনসের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল মতিন, ওয়ান ব্যাংকের ইভিপি, হেড অব এজেন্ট ব্যাংকিং ও এমএফএস ডিভিশন গাজী ইয়ার মোহাম্মদ এবং আইপিডিসি ফিন্যান্সের এমডি ও সিইও মমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
সামিটে কলাবরেশন পার্টনার হিসেবে রয়েছে ইউনাইটেড নেশন্স ক্যাপিটাল ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইউএনসিডিএফ)। নলেজ পার্টনার ইএমবিএ (ইউল্যাব), স্ট্র্যাটেজিক পার্টনার হিসেবে আছে এটুআই অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট, বাংলাদেশ ইনোভেশন কনক্লেভ এবং ডিজিটাল ফাইন্যান্স ফোরাম বাংলাদেশ।