কাজিপুরে ‘গাইঞ্জা’ ধানের বাম্পার ফলন

কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলে যমুনা নদীতট জুড়ে আমন মৌসুমী স্থানীয় জাতের গাইঞ্জা ধান চাষের ঐতিহ্য বেশ পুরোনো। গাইঞ্জা ধানের সরু চালের সুস্বাদু ভাত, মুরি এবং পিঠা পুলির সুখ্যাতির পাশাপাশি গো-খাদ্য হিসেবে চিকন খরের আলাদা চাহিদা রয়েছে। উৎপাদন ব্যয়, ফলন এবং চাহিদা ও বাজারদর বিবেচনায় লাভজনক হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মাঝে ব্যাপক জনপ্রিয় গাইঞ্জা ধান এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। আবেগ ও উচ্ছ্বাসে চওড়া হাসি স্থানীয় কৃষকদের চোখে মুখে।

[৩] পলি বাহিত যমুনা নদীতে বন্যা নেমে যাওয়ার সাথে সাথে ঢাল, খাড়ি, কোল, বা ডুবো চরের পলি মাটির থকথকে কাদায় বীজ অথবা চারা রোপণ করে কৃষক। সার, সেচ ও পরিচর্যা ছাড়া গাইঞ্জা ধান বেড়ে উঠে। কর্তন পর্যন্ত সর্বোচ্চ একবার সামান্য কিছু রাসায়নিক সার প্রয়োগ করতে হয় যদি প্রয়োজন থাকে। রোগবালাই একেবারেই নেই। এ কারনে গাইন্জা ধান বিনা চাষের ফসল হিসেবে বিবেচিত।

[৪] কৃষক সালাম,খালেক নুরুল জানায়, ৫ বিঘা জমির পাকা ধানে দেখে চোখ জুড়িয়ে যায়, অন্যান্য বারের তুলনায় এবার ফলন ভালো হয়েছে। আমন মৌসুমের শুরুতে অলস সময়ে গাইঞ্জা ধান রোপন করেছি। আমন কাটার পর অলস সময়ে এ ধান ঘরে তুলি, এক কথায় বলতে গেলে কৃষকের অসময়ের ফসল। ব্যাপক ফলন হয়েছে এবার।

[৫] উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রেজাউল করিম জানান, চরাঞ্চলে অবসরকালীন বাড়তি ফসল হিসেবে চাষিরা প্রায় সারা বছরই গাইঞ্জা ধান চাষ করে থাকে। এই ধান হতে প্রায় সারে তিন মাস সময় লাগে। মৌসুমে বিঘা প্রতি ১০ থেকে ১২ মণ এবং অমৌসুমে ৮ থেকে ১০ মণ পর্যন্ত ফলন হয়। ৯ হাজার ৫’শ মেঃটন মাত্রায় এ বছর ৩ হাজার ৪’শ হেক্টর জমিতে গাইঞ্জা আবাদ হয়েছে। বাম্পার ফলনের কারণ অনুকূল আবহাওয়া বিরাজ ছিলো।

লাভজনক স্থানীয় জাতের গাইঞ্জা ধান বীজ সরকারি পর্যায়ে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ, গবেষণা এবং দেশব্যাপী সম্প্রসারণে সচেতন মহলের তাগিদের প্রেক্ষিতে ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শাহরিয়ার জানান, স্থানীয় সকল জাতের ধান বিশেষ করে বিলুপ্ত প্রায় জাতের ধানের জিন সংরক্ষিত আছে। উচ্চ ফলনশীলতা ও আবহাওয়া সহনশীলতা বৃদ্ধিতে গবেষণা পরবর্তী দেশব্যাপী সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *