আইফোনের ভালো-মন্দ

আইওএস হচ্ছে অ্যাপল নির্মিত মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম। ২০০৭ সালে এর প্রথম ভার্সন উন্মুক্ত করা হয়। বর্তমানে বাজারে আইওএসের স্ট্যাবল ভার্সন ১৩ উন্মুক্ত রয়েছে। তবে আইওএস শুধু ফোনের অপারেটিং সিস্টেম। অ্যাপলের আই ওয়াচ এবং আইপ্যাডের জন্য আলাদা অপারেটিং সিস্টেম ওয়াচওএস ও আইপ্যাডওএস রয়েছে।

অ্যান্ড্রয়েডের পর মোবাইল ব্যবহারকারীদের পছন্দের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে আইওএস। ২০১৯ সালে আইওএস ৫ হাজার ৪০০ কোটি ডলার আয় করেছে, যেখানে গুগলের আয় ৩ হাজার ৯০০ কোটি ডলার।

অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের যেমন ভালো ও মন্দ দিক রয়েছে, তেমনি আইওএসেরও ভালো-মন্দ রয়েছে।

আইফোনের ভালো দিক

সহজ ব্যবহার: ইউজার ইন্টারফেস বা ব্যবহারের দিক থেকে আইফোন অনেকটাই সহজ। কেউ কেউ অভিযোগ করেন যে, আইফোনকে কাস্টমাইজ করা যায় না। কিন্তু এটিই এই ফোনের সব থেকে ভালো গুণ। শিশু থেকে বৃদ্ধ যে কেউ সহজেই এটি ব্যবহার করতে পারবেন। তাদের মধ্যে প্রযুক্তিভীতি কাজ করবে না।

সুন্দর ডিজাইন: ফোনের ডিজাইনের দিক থেকে আইফোন সবার আদর্শ। বিশ্বের প্রতিটি স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আইফোনের নির্মাণশৈলী অনুসরণের চেষ্টা করে। বেজেল টু বেজেল স্ক্রিনের প্রথম চলন শুরু করে আইফোন। বর্তমানে হেডফোন জ্যাক সরিয়ে ফেলার যে ট্রেন্ড, সেটির যাত্রাও আইফোনের হাত ধরেই শুরু হয়। আইফোন সর্বপ্রথম বাইডিরেকশনাল পোর্ট লাইটিং কেবল ব্যবহার শুরু করে।

ক্যামেরা: ক্যামেরার দিক থেকে আইফোন ব্যবহারকারীদের কাছে জনপ্রিয়তার শীর্ষে। একটু বেশি দামের আইফোনের ক্যামেরা দিয়ে অনেকেই শর্টফিল্ম, মিউজিক ভিডিওয়ের কাজও করে থাকেন। অপটিক্যাল ও ইলেকট্রিক ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন, ফোরকে ভিডিও ধারণের সক্ষমতাসহ ভালো মানের ছবির জন্য আইফোন পছন্দের শীর্ষে।

বেটার বিল্ড কোয়ালিটি: একেবারে প্রথম থেকেই আইফোনের বিল্ড কোয়ালিটি অসাধারণ। এর গ্লাস এবং স্টিলের যে নির্মাণ, সেটা এই ফোনের রাজকীয় চেহারাপ্রাপ্তির অন্যতম কারণ। এখন পর্যন্ত অন্য কোনো স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এই বিল্ড কোয়ালিটির কাছে আসতে পারেনি।

উচ্চমানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা: নিরাপত্তা প্রদানের দিক থেকে আইফোন সবার উপরে। অ্যান্ড্রয়েড ফোনকে আনলক করার অনেক পদ্ধতি আছে। কিন্তু আপনি চাইলেই আইফোন আনলক করতে পারবেন। যে কারণে আইফোনকে বিশ্বের সবচেয়ে নিরাপদ স্মার্টফোন বলা হয়।

সফটওয়্যার আপডেট: আপনি যদি আইফোন ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে আপনি প্রতিনিয়ত এর সফটওয়্যার আপডেট পেতে থাকবেন। আপনার আইফোন যদি পাঁচ-ছয় বছর পুরনো হয়, তাহলেও আপনি আপডেট পাবেন। যেখানে অ্যান্ড্রয়েড ফোনগুলোতে সর্বোচ্চ দুই বছর আপডেট প্রদান করা হয়।

আইফোনের মন্দ দিক

অতিরিক্ত দাম: আইফোনের দাম মাত্রাতিরিক্ত হয়ে থাকে। তাই চাইলেই যে কেউ আইফোন ক্রয় করতে পারেন না। এমনকি দুই বছর আগে বাজারে আসা আইফোন বর্তমান সময়ে বাজারে থাকা অ্যান্ড্রয়েড ফ্ল্যাগশিপ ফোনের চাইতেও বেশি।

হেডফোন জ্যাক নেই: বিশ্বের অন্যান্য স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এ পদ্ধতির দিকে ঝুঁকলেও ফোনে ৩ দশমিক ৫ মিলিমিটারের একটি হেড ফোন জ্যাক থাকলে সেটা আপনার জীবনে অন্যরকম একটি প্রভাব ফেলবে।

অ্যাকসেসরিজের অধিক মূল্য: ফোনের পাশাপাশি আইফোনের আনুষঙ্গিক জিনিসগুলোর মূল্যও বেশি হয়ে থাকে। এয়ারপড, ফোনকেজ, লাইটনিং কেবলের দামও বেশি।

কোনো এক্সটার্নাল স্টোরেজ নেই: আইফোনে কোনো মাইক্রো এসডি কার্ড ব্যবহার করা যায় না। আপনি যদি কার্ড রিডারের মাধ্যমে আইফোনের সঙ্গে কোনো মাইক্রো এসডি কার্ড যুক্তও করেন তবুও আপনি আইফোন থেকে কোনো তথ্য, ছবি আদান-প্রদান করতে পারবেন না।

টরেন্ট ক্লায়েন্ট নেই: আইফোনে আপনি কোনো ধরনের টরেন্ট ফাইল নামাতে পারবেন না। কারণে এতে ইউটরেন্ট, বিটটরেন্টসহ সব টরেন্ট ক্লায়েন্ট ব্লক করে দেয়া হয়েছে। যেখানে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীরা সহজেই টরেন্টের ফাইল ডাউনলোড করতে পারেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *