অনলাইনে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা

করোনার প্রভাবে স্থবির শিক্ষাব্যবস্থা। এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা পাচ্ছেন অটোপাস। এরই মাঝে প্রশ্ন ছিল কীভাবে হবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা। এই নিয়ে বৈঠকে বসেন ভাইস চ্যান্সেলরদের (ভিসি) সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ। সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়াল ওই সভায় পরীক্ষা অনলাইনে নেয়ার বিষয়ে নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। গতকাল সন্ধ্যায় ভর্তির বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত নেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা।

বৈঠক শেষে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ বলেন, আমরা অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কোনো বিশ্ববিদ্যালয় এতে দ্বিমত পোষণ করেনি। পরীক্ষা বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. মুনাজ নূরের উদ্ভাবিত সফটওয়্যার ব্যবহারের প্রস্তাব এসেছে।
বৈঠকে সবাই এ ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন। তিনি এই সফটওয়্যার ইউজিসিকে প্রেজেন্ট করবেন। যেহেতু করোনার কারণে অনেক কালক্ষেপণ হয়েছে সেহেতু আমরা দ্রুততার সঙ্গে পরীক্ষা নেয়ার চেষ্টা করবো। সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় সকল বিশ্ববিদ্যালয় আসবে কিনা- এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা দ্বিমত করেননি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, কীভাবে আমরা ভর্তি পরীক্ষা নেবো তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের মিটিংয়ের পরে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ফলাফলের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়টি নাকচ করে দেয়া হয় এবং পরীক্ষা হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির ভিসি মুনাজ আহমেদ নূর বলেন, এই পরিস্থিতিতে সশরীরে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব নয়। এ জন্য সীমাবদ্ধতা মাথায় নিয়ে এই সফটওয়্যারের ভিত্তিতে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা নিতে বলা হয়েছে। এর অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সেটিকে আরো যুগোপযোগী করে অনলাইনে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া সম্ভব। আর এই সফটওয়্যারে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ব্যবহার করা হয়েছে।

তবে ভিন্ন কথা বলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. এমরান কবির চৌধুরী। তিনি বলেন, এখনো পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে নেয়া হবে এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তবে আজকের আলোচনায় বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মুনাজ নূরের উদ্ভাবিত সফটওয়্যার ব্যবহারের প্রস্তাব এসেছে। শিগগিরই ইউজিসি’র সঙ্গে বৈঠকের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক হবে। সেখানে ডিজিটাল সফটওয়্যার বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। যদি সেখান থেকে নির্দেশনা দেয় তাহলে আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ যে ব্যাচগুলোর পরীক্ষাগুলো বাকি আছে সেগুলো নিয়ে নিবো। সেখানে যদি কোনো অনিয়ম ও জালিয়াতি না হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার নেয়ার দিকে যাবো। কেননা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি ও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

বর্তমানে দেশে ৪৬টি সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় থাকলেও ৩৯টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি শিক্ষার্থী ভর্তি নেয়া হয়। এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিদ্ধান্ত হয়েছিল চারটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে তিনটি গুচ্ছ করে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *